Rose Good Luckকোরবানি এবং আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন Rose Good Luck

লিখেছেন লিখেছেন মামুন ০৩ অক্টোবর, ২০১৪, ০১:৫০:১১ রাত



Good Luckআজ অফিস বন্ধ হয়ে গেলো। দুপুরের দিকে যখন মেইন গেট দিয়ে বের হলাম, মনে হচ্ছিল প্যারোলে মুক্তি পেয়েছি। আট দিনের প্যারোল। এই কয়েকদিন আর সকাল ৮টা টু রাত ৮টা ব্যতিব্যস্ত থাকতে হবে না।ভাবছি এই দিনগুলো কিভাবে কাটাবো, তার একটা প্ল্যানিং করছিলাম হেঁটে হেঁটে।

এমন সময় বেরসিকের মত মোবাইলটা বেজে উঠল।

প্রাইভেট নাম্বার দেখে একবার ভাবি, ধরবো কিনা? বন্ধুদের কেউ হবে? নাকি ফেসবুকের কয়েকজন সিনিয়র ভাই বাইরে থাকেন, ওনারাও মাঝে মধ্যে ফোন করেন, তাদের কেউ হতে পারে। কল রিসিভ করি।

সুদূর আমেরিকা থেকে বন্ধুর ফোন।

জুবোর ফোন! মেকুর দ্য গ্রেট! খুব কাছের বন্ধু! Thumbs Up

অনেক কথার পরে কোরবানী নিয়ে আলাপ করলো। আমি গরু কিনেছি কিনা? কত দিয়ে কিনেছি? ইত্যাদি ইত্যাদি।

কথা বলতে বলতে একটা টেম্পু দেখে উঠে পড়লাম। কথা শেষ হবার পরে ভাবতে বসলাম।কোরবানীর আসল উদ্দেশ্য কি?বেশ আগে একজন ছড়াকার এর সাথে এই কোরবানীর তাৎপর্য নিয়ে ফেসবুকে অনেক তর্ক করেছিলাম (নিয়মের বাহিরে গিয়ে)। এখন সেদিকে যাবো না।

কেন কোরবানি দিচ্ছি? কোন নিয়তে এই সৎ এবং ওয়াজিব কাজটি করতে যাচ্ছি?

মানুষের নিয়ত হল, যেটা তার মনের ভিতর সুপ্ত থাকে। আর এটি বুকের বাম পাশে হৃদয়ের ভিতরে সন্তর্পনে লুক্কায়িত, যা একমাত্র আল্লাহপাক-ই জানেন। আর সেই মানুষটি জানে। এখন সকল কাজের ভালো-মন্দ ফলাফল এই নিয়তের উপরেই নির্ভর করবে। এ প্রসঙ্গে একটি হাদীসের কথা উল্লেখ করা যায়-

" কাজের ফল আল্লাহর কাছে নিয়্যত অনুসারে পাওয়া যাইবে। একই সৎকাজ যদি দুইজনে দুই রকম নিয়্যতে করে, তবে প্রত্যেকটি লোকে যেরূপ নিয়্যত করিবে, সে সেইরূপ ফলই পাইবে। অতএব হিজরতের মত সৎ ও মহৎ কাজ যদি কেহ আল্লাহ এবং আল্লাহর রসূলের সন্তুষ্টি লাভের নিয়্যতে করে, তবে সে নিশ্চয়ই আল্লাহ এবং আল্লাহর রসূলের সন্তুষ্টি লাভ করিবে। পক্ষান্তরে যদি কেহ এতবড় সৎকাজও অর্থ-লাভের উদ্দেশ্যে, যশের উদ্দেশ্যে অথবা কোন সুন্দরী স্ত্রী লাভের উদ্দেশ্যে করে, তবে তাহার হিজরতের আল্লাহর কাছে কিছুই মূল্য থাকিবে না, দুনিয়ার যে উদ্দেশ্যে সে হিজরত করিয়াছে, তাহার হিজরত সেই পর্যায়েই থাকিবে।"- বুখারী, মুসলিম

এই হাদীসের দ্বারা প্রমাণিত হল যে, নিয়্যত খাঁটি (ঠিক) না থাকলে সৎকাজ করা স্বত্বেও আল্লাহর কাছে এর কোন মূল্য থাকবে না।

এখন আমার আশেপাশে চলছে কোরবানির নামে পশু ক্রয়ের প্রতিযোগিতার এক মহা উৎসব। আজ অফিস থেকে আসার সময় পথে একটি গরুর হাট পড়ল। এক লোককে দেখলাম মন মরা অবস্থায় একটা বাছুর সাইজের গরুর রশি ধরে ধরে আসছে। আমার টেম্পুর ড্রাইভার তাকে জিজ্ঞেস করলো-

'কি আঙ্কেল, এতো বড় গরু কত দিয়ে নিলেন?- আমার সহযাত্রী সহ রাস্তার প্রায় সবাই ই হাসিতে ফেটে পড়লো। আমার খুব খারাপ লাগলো। ভদ্রোলোকের মাথা নীচু হয়ে গেলো এবং কাঁধ দুটো আরো ঝুলে পড়লো বলে মনে হল আমার কাছে। বেশ আগে নিজের ছেলেবেলায় ফিরে গেলাম। সেই সময় বাজারের সব থেকে বড় গরুটা কেনার জন্য আব্বাকে বলতাম। শেষে আব্বার সাথে এই লোকের মতো একটা বাছুর সাইজের থেকে আরো অপেক্ষাকৃত একটু বড় গরু কিনে বাসায় চলে আসতাম। তখন মন খারাপ হতো সাময়িক। কিন্তু আব্বার মন তো খারাপ দেখি নাই। তবে আজকের এই লোক কেন মন খারাপ করলেন? এটা কি একটা অসুস্থ প্রতিযোগিতা নয়? একই সময় এক বিশাল ষাড় নিয়ে যাচ্ছে দুজন। টেম্পুতে আমার সহযাত্রী সেই লোকগুলোই দাম জিজ্ঞেস করলেন।

'কত পড়লো?

'১ লাখ ১৫ হাজার!' আমি উত্তরের সাথে গরুর মালিকের কথা থেকে গর্ব এবং কিছুটা পরিতৃপ্তির গন্ধ পেলাম যেন। আমি আবার সব কিছুর গন্ধ অন্যদের থেকে একটু বেশী-ই পাই। আমাকে গন্ধ স্পেশিয়ালিস্টও বলা যেতে পারে।

তো সবাই সেই গরুকে বাহবা দিলো তার দামের জন্য। গরুর মালিক যিনি নিজেও একটা দামড়া গরুর সাইজের (আমার কাছে তো তাই মনে হলো। আর মনে হলে তো লিখতে-ই হবে), খুব খুশী হলেন। গর্ব ওনার চোখ-মুখ দিয়ে চুয়ে চুয়ে পড়ছিলো। আমাদের টেম্পু আরো সামনে এগিয়ে গেলো। আমরা দুটো গরুর হাটের মাঝামাঝি ছিলাম। এর পর একের পর এক গরু ও তাদের গর্বিত মালিকেরা আমাদের কে পাশ কাটালেন। দামের ক্রমটা ছিলো এ রকমঃ

৮৫০০০ টাকা

৭৭০০০ টাজা

৬৮৫০০ টাকা

৫০০০০ টাকা

৪২০০০ টাকা

৩৩০০০ টাকা

এর পরে আর নাই।

এখন সবাই তাদের গরু নিয়ে বাড়ি যাবে। পথে দাম বলবে আর নিজেরটাই সেরা মনে করবে। আনন্দ পাবে। ঠিক আছে এই পর্যন্ত।

কিন্তু কোরবানীর দিনে কি হয়?

ইসলামী নিয়ম অনুযায়ী গোশত সমান তিনভাগে ভাগ করে একভাগ অবশ্যই গরীবদের ভিতর দিয়ে দিতে হবে। এখানে কোনো আপোষ নাই। কিন্তু অনেক যায়গায়-ই দেখি কোরবানীর গোশত বানানোর পরে, মেইন গেট বন্ধ করে দেয়। সব ডীপ ফ্রিজে রেখে দেয়। আর গরীবদের কে হাড় ও হাড়ের সাথে কিংবা চামড়ার সাথে লাগানো গোশত, আর সাথে দু'এক টুকরো সলিড গোশত দেয়। আর যারা কোরবানী দিয়েছে, তাদের বাসায় ভালো ভালো গোশত দেয়। তারা আবার যারা তাদেরকে রিটার্ণ গোশত দিয়েছে, তাদেরকে পাঠায়। এভাবে সামর্থবানদের নিজেদের ভিতর এক সাইক্লিক অর্ডারে গোশত প্রদানের অসুস্থ প্রতিযোগিতা চলে।

তাহলে কোরবানীর মুল উদ্দেশ্যটা কি পুর্ণ হল?

আমি অনেক ভেবে দেখলাম, কোরবানীর মুল উদ্দেশ্য কি।

আল্লাহ পাক আমাদের মনের ভিতরকার পশুকে জবেহ করার জন্য, নিজেদের সম্পদকে আল্লাহ'র রাহে বিলিয়ে দেবার প্র্যাকটিস করানোর জন্য, রুপক অর্থে এই পশু কোরবানির সিস্টেম চালু রেখেছেন। একই সাথে পয়গম্বর হযরত ইব্রাহিম (আঃ) এর ছেলেকে আল্লাহর রাহে কোরবানি দিতে মনস্থ হবার এবং পরবর্তিতে দুম্বা (পশু) কোরবানীর করার সিলসিলাকে সম্মান দেবার জন্য এই সিস্টেম। আর এর বাস্তব ভিত্তিক তাৎপর্য হলো, গরীব মানুষের জন্য কিছুদিনের গোশতের সংস্থান হওয়া। সবাই যদি সঠিক নিয়মে এই কোরবানির গোশত বন্টন করে, তবে প্রায় সকল গরীবদের কিছু দিনের প্রোটিনের ব্যবস্থা হয়।

আমার এই লেখার মুল উদ্দেশ্য হল, এতো বেশী টাকা দিয়ে গরু না কিনে সবাই যদি আরো কিছু কম টাকা দিয়ে কিনে, বাড়তি টাকাটা গরীবদের ভিতর সদকা করে দেয়- তবে সমাজের গরীবিও দূর হয়। আবার এই চলে আসা লোক দেখানো অসুস্থ প্রতিযোগিতাও বন্ধ হয়। এ ভাবে সবাই তাদের নিজ নিজ লোক দেখানোর বাড়তি টাকাটা দিয়ে যদি অন্তত একজনও গরিব ভিক্ষককে পুনর্বাসন করতে এগিয়ে আসেন (একজন ভিক্ষককে গরু কেনার সময়ে ওই বড় লোকি দেখানোর বাড়তি টাকাটা পুজি হিসাবে দিয়ে তাকে যে কোনো একটা ক্ষুদ্র ব্যবসায় লাগিয়ে দেয়া যায়। এতে করে তাকে আর হয়তো ভিক্ষা করতে হবে না।), তবে আমাদের সমাজ থেকে গরীবি দূর হতে পারে।

এটা কি ডীপ ফ্রিজে অঢেল গোশত রেখে দিনের পর দিন খেয়ে খেয়ে ক্যান্সার সহ অন্যান্য রোগের আক্রমনের শিকার হওয়ার চেয়ে ভালো নয়?

এটি সম্পুর্ন আমার ব্যক্তিগত মতামত এবং এটি নিয়ে কেউ আমাকে খোচাখুচি না করলে-ই খুশী হবো। এমনিতে-ই হৃদয়ে আমার অনেক খোঁচা খাবার তাজা ক্ষত রয়ে গেছে। আর ব্যাথা সহ্য হবে না। আর আমি কিন্তু একেবারে কোরবানি না দিয়ে টাকাটা সদকা হিসাবে দিতে বলি নাই।

আল্লাহপাক আমাদেরকে নিয়্যত সহীহ করে এই কোরবানি দিবার তৌফিক দান করুন-আমীন। Rose Good Luck

বিষয়: বিবিধ

১৫৫২ বার পঠিত, ১৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

271016
০৩ অক্টোবর ২০১৪ রাত ০৩:০৭
সাদিয়া মুকিম লিখেছেন : আসসালামুআলাইকুম ওয়ারহমাতুল্লাহ! সুন্দর অনুভূতির সাথে সাবলীল লিখাটি আসলেই ভালো লেগেছ পড়ে! Thumbs Up Day Dreaming

খোঁচাখোঁচির প্রশ্নই উঠেনা ভাইয়া, তবে যে বিষয়টা ইবাদতের সাথে সম্পর্কিত সেখানে আমাদের ব্যক্তিগত অনুভূতি প্রয়োগ সমিচীন নয় । আমি শুধু এটুকু যোগ করতে চাই, কোরবানীর নিয়ত সহীহ রাখতে হবে, সুন্নাহ হলো তিন ভাগ বা দু ভাগ করা মোট গোস্তকে 'এই সুন্নাহকে পুনর্জীবিত করা,প্রয়োজনে আরো কিছু নফল কোরবানীর মাধ্যমে স্বীয় এলাকা এটা নিজ গ্রামে হতে পারে বা পছন্দনীয় কোন স্হান হতে পারে সেখানেও ছোট কোন কোরবানী দেয়া! কেননা কোরবানীর মর্যাদা ও সওয়াব অনেক বশি এমনকি টাকার মাধ্যমে যে সাদাকা হয় তার চেয়েও বেশি! স্কলারগন কোরবানী করার জন্যই বলেন টাকা দেয়ার চাইতে!

আশাকরি ভুল বুঝবেন না, একজন কল্যানকামী বোন হিসেবে বললাম! শুভকামনা ও শুভেচ্ছা রইলো Good Luck


০৩ অক্টোবর ২০১৪ সকাল ০৯:৩৭
215133
মামুন লিখেছেন : ধন্যবাদ বোন সুন্দর মন্তব্যের জন্য। তবে আমি কিন্তু এই ইবাদতের সাথে কোনো নেতিবাচক ব্যক্তিগত মত প্রকাশ করি নাই। আল্লাহপাক কিন্তু সুস্থ এবং নিখুঁত পশু দ্বারা কোরবানি করতে আদেশ করেছেন; কিন্তু কোথাও কিন্তু বলেন নাই লাখ টাকার উপরে পশু কিনে জাহির করার জন্য। আমার লিখায়ও আমি বলতে চেয়েছি "এতো বেশী টাকা দিয়ে গরু না কিনে সবাই যদি আরো কিছু কম টাকা দিয়ে কিনে, বাড়তি টাকাটা গরীবদের ভিতর সদকা করে দেয়- তবে সমাজের গরীবিও দূর হয়। আবার এই চলে আসা লোক দেখানো অসুস্থ প্রতিযোগিতাও বন্ধ হয়। এ ভাবে সবাই তাদের নিজ নিজ লোক দেখানোর বাড়তি টাকাটা দিয়ে যদি অন্তত একজনও গরিব ভিক্ষককে পুনর্বাসন করতে এগিয়ে আসেন (একজন ভিক্ষককে গরু কেনার সময়ে ওই বড় লোকি দেখানোর বাড়তি টাকাটা পুজি হিসাবে দিয়ে তাকে যে কোনো একটা ক্ষুদ্র ব্যবসায় লাগিয়ে দেয়া যায়। এতে করে তাকে আর হয়তো ভিক্ষা করতে হবে না।), তবে আমাদের সমাজ থেকে গরীবি দূর হতে পারে। "- এর দ্বারা মূল ইবাদতের কোনো হেরফের হয়েছে কি? Happy

আমার এই কথায়ও আপনি ভুল বুঝবেন না বোন।
আমি দেখেছি আমার আশেপাশে বিত্তবানদের ভিতরে পশু ক্রয়ের ক্ষেত্রে জাহির করার মনোবৃত্তি, অসুস্থ প্রতিযগিতা। এরা যাকাতের নামে স্বল্প মূল্যের শাড়ি-লুঙ্গী দিয়ে নিজেদের দায় সারে, অথচ অত্যধিক দাম দিয়ে পশু ক্রয় করে।

সুন্দর অনুভূতি রেখে যাবার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
জাজাকাল্লাহু খাইর।Good Luck Good Luck
271020
০৩ অক্টোবর ২০১৪ রাত ০৩:৫১
কাহাফ লিখেছেন :

নিজের ভেতরের পশুত্বকে নিঃশেষ করাই কোরবানীর মুল উদ্দেশ্য,লোক দেখানো নয়।
ইরশাদ হচ্ছে... " পশুর রক্ত-মাংশ আল্লাহর কাছে পৌছায় না বরং তোমাদের তাকওয়া তথা খোদা ভীতিই দেখা হয়।"
কোরবানীর প্রকৃত জযবা ফুলে উঠুক আমাদের সবার মাঝে এই- ই কামনা।
অনেক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা....... Rose
০৩ অক্টোবর ২০১৪ সকাল ০৯:৩৮
215134
মামুন লিখেছেন : ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনার কথায় সহমত।
জাজাকাল্লাহু খাইর।Good Luck Good Luck
271038
০৩ অক্টোবর ২০১৪ সকাল ০৬:৩৫
আবু সাইফ লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ..



নহরের দিনে পশুর রক্ত প্রবাহিত করার চেয়ে উত্তম কোন আমল নেই যা আল্লাহতায়ালার কাছে প্রিয় হয়


অগ্রীম শুভেচ্ছে- কুরবানী ও ঈদ মোবারক
ত্যাগের আলোয় ব্যক্তি ও সমাজ জীবন আলোকিত হোক
০৩ অক্টোবর ২০১৪ সকাল ০৯:৩৯
215135
মামুন লিখেছেন : ওয়ালাইকুম আসসালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ..
আপনাকেও অগ্রীম শুভেচ্ছা পবিত্র ঈদের।
জাজাকাল্লাহু খাইর।Good Luck Good Luck
271075
০৩ অক্টোবর ২০১৪ সকাল ০৯:৪১
ফেরারী মন লিখেছেন : আসলেই কুরবানীর নামে যা হচ্ছে তা এক কথায় ভাষায় প্রকাশ করার মত না। ইসলামী রীতিনীতি না মেনে নিজের ইচ্ছেমত কাজকারবার হচ্ছে সবজায়গায়। ভালো লিখছেন যদি এই পোষ্টের মাধ্যমে কারো উপকার হয় তবেই সার্থক।
০৩ অক্টোবর ২০১৪ সকাল ১০:৩৫
215148
মামুন লিখেছেন : ধন্যবাদ ভাই আপনাকে পোষ্টটির মূল মর্মটি বোঝার জন্য।
সহমত আপনার সাথে।
জাজাকাল্লাহু খাইর।Good Luck Good Luck
271152
০৩ অক্টোবর ২০১৪ বিকাল ০৪:২৩
ফাতিমা মারিয়াম লিখেছেন : কুরবানি আমাদের সমাজে এখন এক ধরণের সামাজিকতায় পরিণত হয়েছে। তবে সবাই এরকম করেনা। মহান আল্লাহই ভালো জানেন আমাদের কুরবানি কতটুকু তাঁর দরবারে গৃহীত হয়!!!
০৩ অক্টোবর ২০১৪ বিকাল ০৫:২৯
215244
মামুন লিখেছেন : ধন্যবাদ।
হ্যা, সহমত, সবাই করেনা।
আল্লাহপাক যেভাবে কুরবানি করলে তাঁর দরবারে গৃহীত হয়, সেভাবে কুরবানি করার তৌফিক দান করুন-আমীন।Happy Good Luck Good Luck
271210
০৩ অক্টোবর ২০১৪ রাত ১০:১৭
তিমির মুস্তাফা লিখেছেন :
ভাল লাগল । সময়োপযোগী লেখা। অসুস্থ প্রতিযোগিতা – এই ভোগবাদী সমাজের এক বাজে উপসর্গ – এর থেকে সরে থাকা মুসলিম মাত্রই জরুরী। লোক দেখানো এবাদত – এবাদত হিসেবে গণ্য হবে না! ধন্যবাদ আপনাকে!
ব্লগারদের কেউ কেউ কোন কোন বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হতেই পারেন, সন্দেহ নেই।
আপনার লেখার “ইসলামী নিয়ম অনুযায়ী গোশত সমান তিনভাগে ভাগ করে একভাগ অবশ্যই গরীবদের ভিতর দিয়ে দিতে হবে। এখানে কোনো আপোষ নাই।
কথাটা ঠিক নয়। কুরবানী একটা বড় এবাদত, যাদের সামর্থ আছে তাঁদের জন্য; Sacrifice! । কারো বাড়ীতে যদি ৩০-৪০ জন লোক থাকে আর একটা ছাগল কুরবানি করে তা যদি পুরোটাই নিজেদের খাবারের জন্য ব্যায় হয়, কাউকে না দিলেও - তাতে কুরবানীর কোন সমস্যা হবেন না। এ ব্যপারে একজন জ্ঞানী আলিমের কাছে জেনে নিলে ভাল হয়। অনেক বিষয়ই দেশের প্রথা হিসেবে চালু হয়ে গেছে- তা ‘ইসলামিক’ নাও হতে পারে। মাংস তিন ভাগে ভাগ করার প্রথা একটা ভাল প্রথা হিসেবে উপমহাদেশে চালু আছে; এর কারনে গরীব দুঃখী মানুষও সপরিবারে একবেলা মাংস খেতে পারে । অনেকের মত, আমিও এটার পক্ষে।
তবে এর জন্য একে ‘ইসলামিক বলা যাবে না; কুরআন বা হাদীসে এমন কোন দলিল নেই যা থেকে বলা যাবে-মাংস তিন ভাগে ভাগ করতে হবে, নাহলে কুরবানী হবে না। বরং কুরবানীর মাংস দিয়ে ব্যবসা করা হলে কিম্বা কারো ‘শ্রমের বিনিময়’ হিসেবে দিলে – তা জায়েজ হবে না। যেমন – ধরা যাক, আপনার বাড়ীর কাজের মানুষ- যে বেতনের সাথে সাথে, চুক্তি মত, তিনবেলা ‘খাবার’ পাবার অধিকার (Right)) রাখে, তাকে যদি কেবল কুরবানীর মাংস দিয়ে খেতে দেন, তবে কুরবানীর মাংস তার “শ্রমের মূল্য’ হিসেবে দেয়া হল! এজন্য কাজের লোকদেরকে কুরবানীর মাংসের পাশাপাশি অন্য কোন তরকারী সহ খেতে দেয়া দরকার । যাতে ঐ তরকারীটা সে তার ‘অধিকার বা প্রাপ্য হিসেবে পেল, সাথে কুরবানীর মাংস অতিরিক্ত হিসেবে, এত দোষ হবে না, বরং নিজে যা খাচ্ছি – তা ওদের সাথে শেয়ার করছি- এই সুন্নাহ পালিত হবে! এটা খুব সুক্ষ্ম ব্যপার, অনেকেরই ধারনাও নেই এ ব্যাপারে। পরিস্থিতির চাপে, এক আলেমের কাছে শিখেছিলাম । কাজেই দেশাচার বা প্রথা ও ইসলামী শারয়ী আইন এক নাও হতে পারে। এ ছাড়া তিন ভাগ করা কেন, কুরবানীর মাংস পুরোটা গরিবদের বিলিয়ে দিলে তো আরও ভাল। হজ্জের কুরবানীর মাংস তো তাই করা হচ্ছে!
০৩ অক্টোবর ২০১৪ রাত ১০:৩৬
215360
মামুন লিখেছেন : ধন্যবাদ।
তাহলে দেখছি এতোদিন যা জেনে এসেছি, সবই ভুল। আমাদের ইমামগন মসজিদে জুমুয়ার খুৎবাতে তবে ভুল শিক্ষা দিচ্ছেন? যে সে মসজিদ নয়, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল মসজিদের খতিব/ইমাম দের মুখ থেকেও তো এই কথা অহরহ শুনছি!! তবে তিন ভাগের যায়গায় দুই-ভাগও হতে পাড়ে। আর সব হজ্জের সময়ে দিয়ে দেয়া হয়, ঠিক আছে। কিন্তু আপনার কথানুযায়ী সব বিলিয়ে দিলে আপনার প্রতিবেশীর হক কি আদায় হল?
আমি তর্ক করছি না, শুধু জানতে চাচ্ছি। আর আলেমদের ভিতরেই এতো বিভেদ যে এখন আর কারো কথায় বিশ্বাস করছি না। সহীহ হাদীস গ্রন্থগুলোতে খুঁজে দেখব কি আছে।
সেই পর্যন্ত আপনার কথা মেনে নিলাম।
জাজাকাল্লাহু খাইর।Good Luck Good Luck
271213
০৩ অক্টোবর ২০১৪ রাত ১০:২৩
আহ জীবন লিখেছেন : কয়েক সেকেন্ড বা কয়েক মিনিট মনে না রেখে যদি সবসময় মনে রাখতাম আমি মুসলমান, শুধু কোরবান নয় প্রতিটা ক্ষেত্রেই নিয়ত এমনিই সহি হতো।
০৩ অক্টোবর ২০১৪ রাত ১০:৩৭
215362
মামুন লিখেছেন : ধন্যবাদ।
হ্যা, প্রতিটি ক্ষেত্রেই নিয়ত এমনই থাকা উচিত।
জাজাকাল্লাহু খাইর।Good Luck Good Luck
271251
০৪ অক্টোবর ২০১৪ রাত ১২:৪৯
বৃত্তের বাইরে লিখেছেন : অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে বিষয়টি গুছিয়ে সহজভাবে আলোচনা করার জন্য। দুনিয়াতে যা কিছু করিনা কেন, মনের নিয়তটির উপর আল্লাহর কাছে গ্রহণীয় কিংবা বর্জনীয় হবে। ইসলাম ধর্মের মত এত সুন্দর আখলাকটা পেয়েও মুসলিমরা চলছে তার বিপরীত। বর্তমানে ইসলামের নামে যা করছে কিছু মানুষ তা আসলে লোক দেখানো এবং দুঃখজনক। আপনার কনসেপ্টটা ভাল লাগল। ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে। আল্লাহ্‌ আমাদের সবাইকে বুঝার তৌফিক দিন। আমিন
০৪ অক্টোবর ২০১৪ রাত ০১:১৭
215408
মামুন লিখেছেন : আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ বোন।
আপনার সাথে সহমত।
খুব সুন্দর ভাবে আপনিও অল্প কথায় বর্তমান প্রেক্ষাপটটি জানালেন, এজন্য জাজাকাল্লাহ।
আপনার দোয়ায় আমীন।
শুভেচ্ছা রইলো নিরন্তর।Good Luck Good Luck

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File